আপনার ওয়েবসাইট বা ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন টি হোস্ট করার জন্য যখন আপনি কোন শেয়ারড হোস্টিং প্রভাইডার নির্বাচন করবেন, অবশ্যই শেয়ারড হোস্টিং অপশন গুলো সম্পর্কে আপনার ভাল ধারনা থাকতে হবে, যেন আপনি আপনার জন্য যথাযোগ্য অপশন টি নির্বাচন করতে পারেন। সর্বাধিক ব্যবহৃত ও নির্ভরযোগ্য তিনটি অপশন হল শেয়ারড হোস্টিং, ভারচুয়াল প্রাইভেট সার্ভার এবং ডেডিকেটেড হোস্টিং। প্রশ্ন হচ্ছে আপনার জন্য কোনটি পারফেক্ট? এখানে আমি চেষ্টা করব তিনটি বিষয়ে আপনাদের একটা ক্লিয়ার গাইডলাইন দিতে।
শেয়ারড হোস্টিংঃ শেয়ারড হোস্টিং হচ্ছে সবচেয়ে কমন হোস্টিং সল্যুশন যার প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে স্বল্প খরচ। কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি কেন এর খরচ কম? শেয়ারড হোস্টিং নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে এই হোস্টিং এর সকল রিসোর্স যেমন অপারেটিং সিস্টেম, ডিস্ক স্পেস, ব্যান্ডউইথ ইত্যাদি অনেক ইউজার এর সাথে শেয়ার করা হয়। বেসিকালি শেয়ারড হোস্টিং একাধিক ইউজার কে তাদের ইনফরমেশন হোস্ট করতে এলাউ করে। একাধিক ইউজার মানে ২/৩ জন নয়। ২০০/৩০০ এমনকি ১০০০ ও হতে পারে। আপনি যদি ১০০০ জনের ১ জন হন তাহলে আপনি একটা সার্ভার এর ১/১০০০ ভাগ আপনি ব্যবহার করতে পারবেন। এবং পুরো খরচের ১০০০ ভাগের ১ ভাগ আপনার কাছ থেকে কম্পানি নিচ্ছে। তাই এর দাম এত কম। এই সল্যুশন ছোট-খাট যে কোন ওয়েবসাইটের জন্য যথেষ্ট। যাই হোক, এর ব্যবহার ক্ষেত্রে অনেক ধরনের লিমিটেশন থাকে। যখন আপনার ওয়েবসাইট এবং গ্রাহকের পরিধি ও প্রসার বাড়তে থাকে, আপনি দেখবেন আপনার ওয়েবসাইট ঠিক আগের মত ইউজার ফ্রেন্ডলি নেই। হয়ত ওয়েবসাইট ডাউন অথবা স্লো এমন অনেক ধরনের প্রতিবন্ধকতা দেখা দেবে। এছাড়া আপনার ওয়েবসাইট এর প্রাইভেসি না থাকার কারনে আপনি চাইলেও সর্বোচ্চ সিকিউরিটি দিতে পারছেন না যেহেতু সার্ভার অ্যাক্সেস আপনার হাতে না। এ ধরনের পরিস্থিতিতে শেয়ারড হোস্টিং বাদ দিয়ে আপনাকে ভিপিএস বা ডেডিকেটেড হোস্টিং এ যেতে হবে।
ভারচুয়াল প্রাইভেট সার্ভার/ ভিপিএস হোস্টিংঃ ধরুন একটা ডেডিকেটেড সার্ভার এর ডিস্ক স্পেস ৫০০ জিবি এবং ব্যান্ডউইথ ৫০০০ জিবি। এখন এই সার্ভার টাকে ১০ ভাগে সমান ভাবে ভাগ করলাম। তাহলে এক এক ভাগে ডিস্ক স্পেস ৫০ জিবি এবং ব্যান্ডউইথ ৫০০ জিবি করে পড়লো। এই এক একটা ভাগ কে বলা হয় ভারচুয়াল সার্ভার। তাহলে পুরো সার্ভার তা ১০ জন ইউজার ব্যবহার করলে আপনি ১০ জনের ১ জন। ১০০০ জনের ১ জন হয়ে আপনি শেয়ারড হোস্টিং এ যে সুযোগ সুবিধা পেতেন, ১০ জনের ১ জন হয়ে ডেফিনিটলি আপনি অনেক বেশি সুবিধা পাচ্ছেন। আপনার কাছে ভিপিএস এর রুট কন্ট্রোল প্যানেল থাকায় আপনার ওয়েবসাইট এর সিকিউরিটি শেয়ারড হোস্টিং এর তুলনায় অনেক ভালভাবে মেইনটেইন করতে পারবেন। অধিক পরিমান ব্যান্ডউইথ ব্যবহারের সুযোগ থাকায় আগের থেকে অনেক বেশি ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট এ ডাউনটাইম ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে। রিসোর্স বেশি থাকার কারনে ভিপিএস এর দাম ও তুলনামুলক ভাবে একটু বেশি।
ডেডিকেটেড সার্ভার/ ডেডিকেটেড হোস্টিংঃ ডেডিকেটেড ওয়েব হোস্টিং এখন ছোট-বড় সকল ধরনের ব্যবসায়ের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়ে থাকে যেহেতু এটা আপনাকে অনেক বেশি ফ্লেক্সিবিলিটি দিয়ে থাকে। এখানে একটা ইনফরমেশন ই যথেষ্ট “আপনি একাই ১০০০ জন শেয়ারড হোস্টিং ইউজার বা ১০ জন ভিপিএস ইউজার এর সুবিধা ভোগ করতে পারবেন”। একটা ভাল ডেডিকেটেড সার্ভার হোস্টিং এর মাধ্যমে আপনি লক্ষ লক্ষ ভিজিটর কে আপনার ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সুযোগ দিতে পারবেন। ডেডিকেটেড হোস্টিং এ আপনি সব কিছুই নিজের কন্ট্রোল এ রাখতে পারবেন।
উপরের আলোচনা থেকে আশা করি কিছুটা হলেও হোস্টিং অপশন সম্পর্কে ধারনা পেয়েছেন। আপনার হোস্টিং বাজেট বেশি থাকলে আপনার ওয়েবসাইট ডেডিকেটেড সার্ভারে হোস্ট করাই ভাল অথবা ভিপিএস এও হোস্ট করতে পারেন। বাজেট কম থাকলে প্রথমে শেয়ারড হোস্টিং, এর পরে প্রয়োজন অনুযায়ী ভিপিএস এ আপগ্রেড করে নিবেন এবং যখন আপনার ওয়েবসাইটে অনেক ভিজিটর হবে তখন ডেডিকেটেড হোস্টিং নিয়ে নিবেন।
“ভাল থাকুক আপনার ওয়েবসাইট”
valo laglo boos